Tuesday, October 1, 2013

কাঠগড়ায় যেমন ছিলেন সাকা

by Unknown  |  at  6:41 AM

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
মঙ্গলবার সকালে রায় পড়ে শোনানোর প্রায় পুরো সময়টাতেই হাসিখুশি আর আয়েশি মেজাজে ছিলেন সাকা। তবে রায় শুনে বেশ মুষড়ে পড়েন তিনি।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালের অস্থায়ী কারাগারে আনা হয় সাকা চৌধুরীকে। সকাল ১০টা ২১ মিনিট থেকে সাংবাদিকরা ঢুকতে করেন ট্রাইব্যুনালের এজলাসে। এরই মধ্যে ট্রাইব্যুনাল পর্যবেক্ষক, সাংবাদিক, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও সাকার পক্ষের আইনজীবীদের উপস্থিতিতে আদালত কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।
সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে সাকাকে ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় আনা হয়। এ সময় তিনি সাদা পাঞ্জাবি ও পাজামা পরা ছিলেন। হাতে একটি পানির ছোট বোতল ছিল। কাঠগড়ায় হাসিমুখেই এসেছিলেন সাকা। সকাল পৌনে ১১টার দিকে বিচারকরা এজলাসে আসন গ্রহণ করেন। এ সময় সবাই দাঁড়ালেও সাকা চৌধুরী আয়েশি মেজাজে বসে ছিলেন চেয়ারে।
বিচারকরা রায় পড়ার মধ্যে শুধু একবার উঠে দাঁড়িয়েছিলেন সাকা। এছাড়া বাকি সময় তিনি চেয়ারেই বসেছিলেন। অবশ্য সাকাকে কাঠগড়ায় আনার আগেই আদালতে উপস্থিত হন সাকার স্ত্রী ফরহাদ কাদের চৌধুরী, মেয়ে ফারজিন কাদের চৌধুরীসহ অন্য স্বজনরা। এর কিছুক্ষণ পরে আসেন সাকার দুই ছেলে ফায়েজ কাদের চৌধুরী ও হুম্মাম কাদের চৌধুরী।
এ সময় ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীর বলেন, “মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায়ে আমরা ১৭২ পৃষ্ঠার সারসংক্ষেপ প্রস্তুত করেছি। এটি পাঠ করা হবে।”
এরপর রায়ের প্রথমাংশ পাঠ করেন বিচারক আনেয়ারুল হক। তিনি বেলা ১১টা ৫২ মিনিট পর্যন্ত রায়ের কপি পড়েন। এসময় সাকা হঠাৎ উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, “এগুলো সময় নষ্ট করে পড়ার দরকার নাই। এগুলো তো আগেই অনলাইনে চলে এসেছে।” -এটা বলেই হাসতে হাসতে বসে পড়েন সাকা।
বিচারকদের রায় পড়ার সময় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে কখনো স্বজনদের সাথে, কখনো সাংবাদিকদের সাথে, কখনো পুলিশের সাথে কথা বলতে দেখা গেছে। এসময় তিনি হাসতে হাসতে নিচু কণ্ঠে বলেন, “যেটা পড়া হয়নি সেটা পড়েন, পড়ে চলেন বাড়ি যাই।” এছাড়াও রায় পড়ার সময় সাকা চৌধুরী নিচু কণ্ঠে রায়ের পাল্টা জবাব দেন। রায় পড়ার সময় বিচারকরা কোনো বইয়ের উদ্ধৃতি দিলে সাকা বলেন, “সহি হাদিস।”
এসময় একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের কয়েকটি অভিযোগ প্রমাণিত হলেও সালাউদ্দিনের স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েদের বেশ স্বাভাবিক দেখা যায়।
জানতে চাইলে ট্রাইব্যুনারে কাঠগড়ার পশ্চিম পাশে দাঁড়ানো সাকার ছোট ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, “চাঁটগাইয়া পোলা তো, দুঃখের মধ্যেও হাসতে হয়।”
বেলা ১১টা ৫২ থেকে দুপুর পৌনে ১টা পর্যন্ত রায়ের অপর অংশ পড়েন বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন। দুপুর ১২টা ৪৬ মিনিট থেকে রায়ের শেষ অংশ পড়েন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান। দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে তিনি ৩, ৫, ৬, ৮ -এই চার অভিযোগে সাকাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেন। 
এসময় হঠাৎ সাকা চৌধুরীর হাস্যজ্জ্বল চেহারা ম্লান হয়ে যায়। তিনি কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে উচ্চ স্বরে বলেন, “এই রায় আইন মন্ত্রণালয় থেকে বেরিয়েছে, যা অনলাইনে আগেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এজন্য আইন মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানাই।”
এসময় পুলিশ সাকা চৌধুরীকে কাঠগড়া থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়।
এদিকে রায়ের প্রতিক্রিয়ার সাকার স্ত্রী ফারহাদ কাদের চৌধুরী বলেন, “আমরা আগেই রায় জেনেছি। অনলাইন থেকে এ রায় কপি করে বান্ডিল আকারে সাথে করে নিয়েও এসেছি।”
সাকা চৌধুরীর বোন হাসিনা জাবিল কাদের সিনহা বলেন, “এ রায় অন্যায়। এ রায় বিদেশ থেকে এসেছে।”

https://www.facebook.com/Online.Khobor
www.onlinekhobor.com

0 comments:

Proudly Powered by Blogger.